You dont have javascript enabled! Please enable it!

কিশোরগঞ্জ গণহত্যা ও বধ্যভূমি, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জেও ব্যাপক গ্ণহত্যা, ধর্ষন, লুণ্ঠন সংঘটিত হয়।অসংখ্য বধ্যভূমি আর গণকবরে কিশোরগঞ্জ সয়লাব হয়ে আছে।আর এই হত্যাযজ্ঞের মুলনায়ক ছিল মেজর ইফতেখার।‘দৈনিক বাংলা’য় নরঘাতক,নারী ধর্ষনকারী মেজর ইফতেখার সম্পর্কে বিস্তারিত একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়-
১৯৭১ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে হানাদার বাহিনীর অধিনায়ক নরপশু মেজর ইফতেখার কিশোরগঞ্জে আসে।সে এখানে এসেই শুরু করল নরমেধযজ্ঞ।প্রত্যহ ত্রিশ, চল্লিশ, পঞ্চাশ-এমনকি আরও বেশি করে লোক ধরে এনে মারতে শুরু করলো। বলা বাহুল্য অধিকাংশ লোকই হিন্দু।কাজেই হিন্দু অধিবাসি, যারা কিছুটা নির্ভয় হয়ে ছিলেন, তারা শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করেলন।অনেকে প্রাণভয়ে মুসলমান হতেও শুরু করলেন। ইফতেখার শান্তি কমিটির মাধ্যমে হিন্দুদের আহ্বান করল এই বলে যে, বির্দোষ কোনো লোককে কোনো রকম হয়রানি করা হবে না,…ইফতেখার আর এক ফরমান জারি করল যে, সামরিক কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাউকে ধর্মান্তরিত করা চলবে না। আর হিন্দুদের ধুতি পরে থাকতে হবে। এভাবে নরপিশাচ তাঁর হত্যাযজ্ঞ বিস্তৃত করার প্রাথমিক প্রতস্তুতি সম্পন্ন করল। শয়তানের কপটতায় বিশ্বাস করার প্রথম বলি হলেন বাবু গিরিজামোহন চক্রবর্তী। … কত অসংখ্য মানুষ যে নরপিশাচদের হাতে প্রাণ দিয়েছে তাঁর সঠিক তথ্য বের করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার।
খগেন্দ্রনাথ লৌহ, মেইল রানার হরিমোহন, আইন ব্যবসায়ী অশ্বিনী বাবুর দুই সন্তান প্রবীর ও সুধীর, পাকুন্দিয়া থানার মেডিক্যাল অফিসার সংস্কৃতিবান একজন হিন্দু ভদ্রলোক দুই ছেলেসহ নিহত হলেন নরপিশাচ ইফতেখারের হাতে। তাঁর তিন মেয়ে দুজন গ্রাজুয়েট, একজন ম্যাট্রিকুলেট ওদের ধরে এনেছিল সে শয়তান। ওদের আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।… ক্ষেত্রমোহন মণ্ডল, তাঁর বড় ভাই, ভাইপো, জামাইরা-কেউ বাঁচতে পারেনি ঘাতুক ইফতেখারের হাত থেকে। … তারপাশব প্রবৃত্তির লেলিহান শিখায় যেসব সদ্য স্বামীহারা, পিতৃহারা, মাতৃহারা হতভাগিনী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, তাঁদের এরপর স্থানান্তরিত করা হয়েছে মহকুমার বিভিন্ন কেন্দ্রে। পশু পশ্চিমা হানাদার আর কুখ্যাত রাজাকার, মুজাহিদ আলবদর বাহিনীর কমান্ডার এবং স্বঘোষিত অফিসার ইনচার্জদের হাতে।
[১৩৭] সুকুমার বিশ্বাস

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!